ময়মনসিংহে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে প্রতারণা আটক চার ভাই।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি।। ময়মনসিংহে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে প্রতারণা করার অভিযোগে চার ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই প্রতারক চক্র আকর্ষণীয় বেতনের কথা বলে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকরি প্রত্যাশীদের ডেকে নিতো। এরপর আটকে রেখে কিডনি বিক্রি করার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতো বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেফকৃতরা হলেন- ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের সুতিরপাড়া গ্রামের মুন্সিবাড়ী এলাকার মৃত সেকান্দর আলীর ছেলে মো. সাবিকুর রহমান (৩৪), তার ভাই মো. শাহজাহান মিয়া (৩৫), মো. শামীম হাসান (২৬) ও মো. সাইদুল ইসলাম (২৪)।

শুক্রবার (১ জুলাই) সন্ধ্যার পর প্রতারণার শিকার কাউছার হামিদ ওই চার ভাইকে আসামি করে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা করেন। পরে রাতেই অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।

শনিবার (২ জুলাই) দুপুরে গ্রেফতার চার প্রতারককে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ওই প্রতারক চার ভাই কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত স্থানীয় একটি পত্রিকায় আকর্ষণীয় বেতনে চাকরির বিজ্ঞাপন দেন। ওই বিজ্ঞাপন দেখে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার আবুল কাশেমের ছেলে মো. কাউছার হামিদ পত্রিকায় দেওয়া নম্বরে ফোন করেন। তাদের কথামতো গত মে মাসের ৪ তারিখে নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত পদে তার জীবনবৃত্তান্ত পাঠান। পরে গত ২৮ জুন কাউছার হামিদের নম্বরে ফোন করে প্রতারক মো. সাবিকুর রহমান পরদিন ময়মনসিংহে তাকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য আসতে বলেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ২৯ জুন বিকেলে কাউছার হামিদ ময়মনসিংহ মহানগরীর শম্ভুগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের সামনে আসলে প্রতারক শফিক ও তার ভাই মো. শাহজাহান মিয়া তাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে গৌরীপুরের ভাংনামারী ইউনিয়নের সুতিরপাড়া গ্রামে নিয়ে যান। সেখানে একটি ঘরে আটকে রাখেন। এরপর প্রতারক চক্রের সদস্যরা কাউছার হামিদের কিডনি নিয়ে বিক্রি করার হুমকি ও বেধড়ক মারধর করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কাউছার হামিদ তাদের বুঝিয়ে তিন লাখ টাকার দেবেন বলে রাজি করেন। পরদিন ৩০ জুন সন্ধ্যার পর এক লাখ টাকা কাউছার তার পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে বিকাশে নিয়ে প্রতারক চক্রের কাছে দেন। পরে রাত ১১টার দিকে কাউছারকে ছেড়ে দেয় প্রতারক চক্র।

ওসি শাহ কামাল আরও বলেন, কাউছার হামিদ সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে শুক্রবার রাতে ওই চার ভাইকে আসামি কোতোয়ালী মডেল থানায় প্রতারণার মামলা করেন। মামলার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং দীর্ঘদিন ধরে তারা এমন প্রতারণা করে আসছেন বলেও জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share & Like
Share & Like