ময়মনসিংহ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চলছে অনিয়ম দুর্নীতি

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ ময়মনসিংহ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে চলছে অনিয়ম দুর্নীতি। কমিটির সিলেকশন ছাড়াই মনগড়া পদন্নোতি ও বিনা টেন্ডারে কয়েক লাখ টাকার কাজ করায় কলেজ সভাপতি বরাবরে অভিযোগ করেছেন হোমিওপ্যাথিক অনুরাগী ও চিকিৎসকবৃন্দ।
ময়মনসিংহ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ২০১৮ সনে জেষ্ঠ্যতা লংঘন করে এক মাসের জন্য অধ্যক্ষ পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয় ডাঃ মোঃ ইব্রাহীম খলিলকে। চলতি দায়িত্ব পেয়েই তিনি স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি সহ কলেজ বিরোধী কর্মকান্ড পরিচালনাসহ নানা অনিয়ম শুরু করেছেন।
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী হোমিওপ্যাথি কলেজ ম্যানেজিং কমিটিতে সংশ্লিষ্ট জেলায় জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা জেলা প্রশাসক কর্তৃক নিযুক্ত কোন কর্মকর্তা কলেজের সভাপতি থাকার বিধান রয়েছে। এছাড়া বিভাগ ভিত্তিক বোর্ড প্রতিনিধি সংযুক্ত থেকে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভা বাধ্যতামুলক। ময়মনসিংহ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এ আইনের বালাই নেই।
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড স্মারক নং ১(৫)/০১১/২০২২/৬০৬(০৪) তাং-১৭/০৪/২২ ইং তারিখে রেজিষ্ট্রার- কাম-সেক্রেটারী ডাঃ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত পত্রে এই কলেজের ম্যনেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। অথচ কলেজ কর্তৃপক্ষ কমিটি গঠন প্রসঙ্গে কোন পদক্ষেপ নেন নাই। ঐ চিঠিতে বোর্ডের বিধি মোতাবেক একটি পুর্ণাঙ্গ পরিচালনা কমিটি গঠন পুর্বক গঠিত কমিটির সভাপতির প্রতিস্বাক্ষরে এক মাসের মধ্যে অত্র বোর্ডের অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করার বিষয়ে গত ১০/২/২২ তারিখের বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় বলে উল্লেখ করা হয়। পত্রে আরো উল্লখ করা হয়, ময়মনসিংহ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে পরিচালনার সুবিধার্থে উক্ত কলেজের জন্য বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে বিধি মোতাবেক একজন নিয়মিত অধ্যক্ষ, দুইজন উপাধ্যক্ষসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের বিষয়ে জরুরীভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। বোর্ডের নির্দেশনা থাকার পরও চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কমিটি গঠনে কোন পদক্ষেপ নেননি।
বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী কলেজে নিয়োগ, পদন্নোতি সরকারী অনুদানের অংশ স্বারকে কলেজে দায়িত্ব বোর্ড সদস্যসহ বোর্ডের একটি সিলেকশন কমিটি দ্বারা তা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার বিধান রয়েছে। সুচতুর চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ ইব্রাহীম খলিল কলেজ সভাপতিকে ভূল ব্যাখ্যা দিয়ে তার অনুসারী মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির মাধ্যমে নিজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন ও অনুমোদনের জন্য বোর্ডে প্রেরণ করেন। একই সাথে সিলেকশন কমিটির অনুমোদন ও যাচাই বাছাই ছাড়াই গত ২৫/০৮/২০২২ তারিখে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভা করে ঢালাও পদোন্নতি দেওয়া দেয়া হয়েছে। সিনিয়ির মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম ও প্রভাষক ডাঃ মোঃ হুমায়ুন কবির কামালকে বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই সহকারী অধ্যাপক পদে কলেজ থেকে বেতন দেয়া হচ্ছে। ঐ সভায় বোর্ড সদস্য (সরকার মনোনিত) ডাঃ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়া উক্ত কলেজে বিনা টেন্ডারে প্রায় ৭ লক্ষাধিক টাকার আসবাবপত্র তৈরী করা হয়েছে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে ডাঃ ইব্রাহীম খলিল বলেন, কমিটি গঠন হয়নি, চলমান। বোর্ডের পত্রের আলোকে কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে তাহলে কিভাবে কমিটির সভা দেখিয়ে পদোন্নতি প্রাপ্ত হলেন এবং অন্য দুইজনকে পদোন্নতি দেয়া হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি চায়ের দাওয়াত দিয়ে ফোন কেটে দেন।