তারাকান্দায় বিধবা নারীকে নির্যাতন, বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা।

স্টাফ রিপোর্টার ।। ময়মনসিংহের তারাকান্দায় মাঝিয়ালি তে কুলসুম বেগম নামে এক বিধবাকে শারীরিক নির্যাতন করে তার স্বামীর বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদের পায়তারা করছেন প্রতিপক্ষের লোকজন।
বিধবা ওই নারী তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়ন এর মাঝিয়ালি গ্রামের মৃত মেরাজ আলীর স্ত্রী।
এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে আট জনের নাম উল্লেখ করে তারাকান্দা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ এর এজাহার সুত্রে জানা যায়, বিধবা ওই নারী তার সন্তানদের কে নিয়ে বসত ভিটা ছেড়ে না যাওয়ায় প্রায় সময়ই তাদের মারপিট করে প্রতিপক্ষের লোকজন।
কুলসুম বেগম বলেন, আমি একজন বিধবা মহিলা। ঢাকায় বাসা বাড়ীতে কাজ করে সংসার চালাই। বিবাদী ১। মোঃ নজরুল ইসলাম (৩৫) ২। মোঃ রফিকুল ইসলাম (৩০) উভয় পিতা- মোঃ জয়নাল আবেদীন, ৩। মোঃ জয়নাল আবেদীন (৬০), ৪। মোঃ মোসা (৫২) ৫। আমিনুল (৩৫) ৬। মোঃ রেজাকুল (৩০) ৭। মোঃ মোস্তফা (৪০) সর্ব পিতা-মৃত মন্নাফ, ৮। মোছাঃ নূরজাহান (৫০) স্বামী মোঃ জয়নাল আবেদীন, সর্ব সাং-মাঝিমালী, খানা-তারাকান্দা, জেলা-ময়মনসিংহ। বিবাদীগন আমার পাশাপাশি বাড়ীর বাসিন্দা। বিবাদীগন খুব খারাপ, দাঙ্গাবাজ ও পরধনলোভী প্রকৃতির লোক। আমি বাড়ীতে না থাকার সুযোগে বিবাদীগন দীর্ঘদিন যাবত আমার সাফ কাওলা জমি জোরপূর্বকভাবে বেদখল করার চেষ্টা করে আসছে। তারাকান্দা থানাধীন মাঝিয়ালী মৌজায় খতিয়ান নং -১৯৩৫,জে এল নং – ১৫০,দাগ নং -১৯৩৩ শ্রেণি- বাড়ীর ১০ শতাংশ জমি আমি জনৈক আবুল কালাম এর নিকট হতে গত ইং-০৯/১২/১৯৯৮ সালে সাফ কাওলা দলিল মূলে ক্রয় করে অদ্যবধি পর্যন্ত ভোগদখলে বিদ্যমান থেকে বাড়ী নির্মান সহ গাছপালা রোপন করি। উক্ত জমি ক্রয় করার পর থেকে সকল বিবাদীগন জোরপূর্বকভাবে বেদখল করার শলাপরামর্শ ও পায়তারা করে আসছে। গত ১৩ জুন ২০২২ ইং তারিখ সকাল আনুমানিক ১০.৩০ টার সময় আমি আমার সাফ কাওলা জমিতে গাছের চারা রোপন করতে গেলে সকল বিবাদীগন দা, শাবল, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়া বে-আইনী জনতাবদ্ধে একই উদ্দেশ্যে আমার সাফ কাওলা জমিতে জোড় পূর্বক প্রবেশ করে আমাকে চারা রোপন করতে বাঁধা নিষেধ করে। তখন আমি বাধা নিষেধ দেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসাবাদ করলে ২নং বিবাদীর হুকুমে ৮নং বিবাদী আমার চুলের মুঠি ধরে টানা হেচরা করে মাটিতে ফেলে দেয় এবং ১নং বিবাদীর হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে আমার মাথার ডান পাশে আঘাত করে ফুলা জখম করে। আমি মাটিতে পরে গেলে অন্যান্য সকল বিবাদীগন আমাকে বাঁশের লাঠি ও লোহার রড দিয়া এলোপাথারি মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে এবং সকল বিবাদীগন আমার সাথে থাকা ৪০০০/-(চার হাজার) টাকা নিয়া যায়। একপর্যায়ে সকল বিবাদীগন পরস্পর যোগসাজসে আমার কাঁঠাল গাছের ১২ টি কাঁঠাল জোরপূর্বকভাবে নিয়া যায়। যাহার মূল্য আনুমানিক ১,০০০/-(এক হাজার) টাকা এবং ২০টি মেহগনি গাছের চারা ভাঙ্গিয়া অনুমান ১,০০০/- (এক হাজার) টাকার ক্ষতিসাধন করে। আমার ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আমাকে বিবাদীগনের কবল হতে উদ্ধার করে। বিবাদীগন সাক্ষীগনের সামনে প্রকাশে হুমকি দিয়া বলে যে, আমাকে বাড়ীতে থাকতে দিবে না এবং আমার সাফ কাওলা জমি জোরপূর্বক ভাবে বেদখলে রাখিবে। আমি জমিতে গেলে আমাকে খুন করিয়া লাশ গুম করে ফেলবে। পরে সাক্ষীগনের সহায়তায় আমি ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে তারাকান্দা থানায় লিখিত অভিযোগ করি।
উক্ত অভিযোগ তদন্ত চলাকালীন অবস্থায় গত ১০ সেপ্টেম্বর আবারো বিবাদীরা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে আমার ও আমার পরিবার এর উপর হামলা চালিয়ে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে বেধম মারপিট করে আমাকে বসত ঘর থেকে বের করে দিয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে দেয়।
ঘটনার বিষয় টি তারাকান্দা থানা কে অবহিত করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে আমার ঘরের তালা খোলে দেয়।
বর্তমানে আমি পরিবার পরিজন নিয়ে আতংকিত অবস্থায় জীবন যাপন করছি।
এ বিষয়ে প্রতিপক্ষের নুরজাহান বেগম মারধোর এর বিষয়টি স্বীকার করলেও অস্ত্র নিয়ে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তারাকান্দা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আবুল খায়ের জানান, বিধবা ওই নারীকে মারপিটের ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত চলছে।