পূর্বধলায় আইন মন্ত্রানালয়ের ভুয়া নিয়োগ পত্র দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার।। বেকারত্বের অভিশাপ ঘুচিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করতে মুখিয়ে আছে দেশের লাখ লাখ তরুণ-যুবা। তাই তো চাকুরির প্রলোভন যে সম্ভাবনা নয় বরং কোন প্রতারক চক্রের একটি ফাঁদ- তা বুঝে উঠতে পারে না অনেকেই। এই সুযোগ নিতে ভুয়া নিয়োগের জাল পেতেছে প্রতারকরা। হাজার হাজার চাকুরিপ্রার্থীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর
ভুক্তভোগীদের প্রতারিত হয়ে দুর্দশা কেবল বেড়েই চলেছে বেকারদের। এমনি এক প্রতারণার শিকার পূর্বধলার অসহায় কৃষক হযরত আলী। ভুক্তভোগী হযরত আলী পেশায় একজন দরিদ্র কৃষক। তিনি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার ৬ নং পূর্বধলা ইউনিয়ন এর নসীবপুর এলাকার মৃত উমেদ আলীর পুত্র। অপরদিকে জারিয়া পূর্ব পাড়ার মৃত করিম খান এর পুত্র অভিযুক্ত আব্দুল কুদ্দুস বেড়াইল শ্বশুর বাড়িতে ঘর জামাই থেকে বিছিয়েছেন প্রতারণার জাল।
আইন মন্ত্রণালয়ে এম,এল,এস,এস পদে চাকরি দেওয়ার নামে ভুয়া নিয়োগ (যোগদান) পত্র দিয়ে তিন লাখ উনিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মোঃ আব্দুল কুদ্দুস (৪৫) এর বিরূদ্বে।
ভুক্তভোগী হযরত আলী (৫৩), এনআইডি নং-৩৭১৪০১৮৫৫৭,পিতাঃমৃত উমেদ আলী,সাং-নসীবপুর (৬নং-পূর্বধলা ইউপি) থানা-পূর্বধলা, জেলা- নেত্রকোণা জানান, অভিযুক্ত আব্দুল কুদ্দুস একজন লোভী প্রতারক, প্রকৃতির লোক। প্রতারনা মূলক ভাবে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে পরের টাকা পয়সা আত্মসাত করাই তার স্বভাব। আমি গ্রামের সহজ সরল লোক আমার ছেলে মোঃ মোজাম্মেল হক এর চাকুরীর বিশেষ প্রয়োজন থাকায়, বিভিন্ন অফিসে ঘোরাফেরা করে চাকুরীর কোন সন্ধান না পাওয়ায়,মোঃ আব্দুল কদ্দুস খান, জানায় আইন মন্ত্রণালয়ে এম এল এস এস পদে কিছু লোক নিয়োগ করা হইবে। আমি প্রথমে তার কথা বিশ্বাস না করায় উক্ত প্রতারক আমাকে আইন মন্ত্রণালয়ের স্বারক নং-১৮১(৪) তারিখ-২৪/০৮/২০১১ ইং দেখিয়ে বলে এই স্বারকে নিয়োগ করা হবে। আমি তার কথা বিশ্বাস করে আমার ছেলের ভবিষ্যতের আশায় জমি ও গরু বিক্রি করে চাকুরী বাবদ ইং- ০৪/০২/২০২০ তারিখ নগদ ৩,১৯,০০০/-টাকা দেই। আব্দুল কুদ্দুস আমার নিকট হতে চাকুরী বাবদ টাকা নেওয়ার পর আমাকে লিখিত ভাবে জানায় মোজাম্মেল হককে সম্পূর্ণ যাচাই বাচাই করে মাষ্টার রোল ভিত্তিতে এম.এল.এস.এস হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পর নিয়োগ পত্রের যোগদানের জন্য আমার ছেলের নামে অফিসিয়াল কোন চিঠি পত্র না আসায়, তাকে বিষয়টি জানালে তিনি আমার সাথে কথাবার্তার মাধ্যমে তর্কবিতর্ক করে। আমার ছেলের চাকুরী না হওয়ায় আমার দেওয়া নগদ ৩,১৯,০০০/-টাকা ফেরত চাইলে দেই দিচ্ছি বলিয়া টালবাহানা করে। চাকুরী বাবদ টাকা আমাকে দেওয়ায় কয়েক দফা গ্রাম্য শালিশ বসে। উক্ত শালিশীতে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করলেও আমাকে অদ্যবধি টাকা ফেরত দেয়নাই। ইং-২০/০৩/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমান ১০.০০ টা সময় পুর্বধলা থানাধীন, বেড়াইল সাকিনস্থ অভিযুক্তর শশুর বাড়ীতে গিয়ে তাকে পেয়ে টাকা ফেরত চাইলে আমার সাথে অসদাচরন করে অসামাজিক ভাষায় গালি গালাজ করে এবং আমার দেওয়া চাকুরী বাবদ টাকা ফেরত দিবেনা বলে অস্বীকার করে। আমার দেওয়া নগদ চাকুরী বাবদ ৩.১৯,০০০/-টাকা ফেরত না দিয়ে প্রতারনা করার উদ্দেশ্যে বিশ্বাস জন্মাইয়া বিশ্বাস ভঙ্গ করে টাকা আত্মসাৎ করার জন্য পায়তারা করে চলছে। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা গ্রাম্য শালিশীসহ থানায় অভিযোগ করেও কোন সুরাহা হয়নি।
ভুক্তভোগী হযরত আলী আরো জানান, আব্দুল কুদ্দুস বাংলাদেশ আইন মন্ত্রণালয়ে এম,এল,এস,এস পদে চাকরির কথা বলে আমি ছাড়াও এলাকায় একাধিক ব্যাক্তির কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তিনি
মন্ত্রানালয়ের বিভিন্ন সচিব,মন্ত্রী ও সরকারি অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে মর্মে চাকরি দিতে পারবেন বলে ভুক্তভোগীদের আশ্বস্ত করেন। অভিযুক্ত আব্দুল কুদ্দুস এর শ্বশুর বাড়ি বেরাইল গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আনুমানিক ৫ থেকে ৬জন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে, কিন্তু কাউকে চাকরি দিতে পারেননি।
বেরাইল গ্রামের একাধিক ব্যাক্তি অভিযোগ করে বলেন, আব্দুল কুদ্দুস কর্তৃক চাকরির প্রলোভনে আমাদের এলাকার অনেকেই টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন এ বিষয়ে একাধিকবার সালিশ দরবার করেও ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত পেতে ব্যর্থ হয়েছেন আমরা এর আইনি ব্যবস্থা চাই।
এ ব্যাপারে আব্দুল কুদ্দুস এর সাথে যোগাযোগ করতে তার বাড়িতে গেলে তিনি লোকজন এর উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব হারানো ভুক্তভোগী হযরত আলী একাধিকবার স্থানীয় দরবার শালিসসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। এর থেকে তিনি পরিত্রাণ পেতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।